F বেকসুর খালাসদের সাজা চেয়ে ফের আইনি লড়াইয়ে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার! সুপ্রিম কোর্টের আইনি ব্যাখ্যায় নবদিশা
Newsletter image

Subscribe to the Newsletter

Join 10k+ people to get notified about new posts, news and tips.

Do not worry we don't spam!

বেকসুর খালাসদের সাজা চেয়ে ফের আইনি লড়াইয়ে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার! সুপ্রিম কোর্টের আইনি ব্যাখ্যায় নবদিশা



বেকসুর খালাসদের সাজা চেয়ে ফের আইনি লড়াইয়ে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার! সুপ্রিম কোর্টের আইনি ব্যাখ্যায় নবদিশা

আবার আইনি লড়াইয়ের পথে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার এবং প্রতিবাদীরা। তাঁদের বিশ্বাস, নির্যাতিতার জন্য এ বার সুবিচার ছিনিয়ে আনতে পারবেন। এই ভরসা তাঁদের জুগিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের করা অপরাধ আইনের নয়া ব্যাখ্যা।

অভিযুক্তেরা যাতে সুবিচার পান, সেই নিয়ে বহু বছর ধরেই তৎপর সুপ্রিম কোর্ট। এ বার নির্যাতিত বা তাঁর পরিবারের স্বার্থরক্ষা নিয়ে সক্রিয় হল শীর্ষ আদালত। অপরাধ আইনের ব্যাখ্যা করে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি জানিয়েছে, অভিযুক্তকে আদালত মুক্তি দিলে নির্যাতিত বা ভুক্তভোগী বা তাঁর পরিবারও তাঁকে দোষী প্রমাণ করার জন্য আবার কোর্টে আবেদন করতে পারবেন। এর ফলে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার বা আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের কাছে অভিযুক্ত বা বেকসুর খালাসদের কড়া সাজা চেয়ে আবার আবেদন করার সুযোগ থাকছে। এই রায় শুনে অনেকটাই আশ্বস্ত কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে পথে নামা আন্দোলনকারীরা। কামদুনি কাণ্ডে নির্যাতিতার জন্য বিচার চেয়ে যাঁরা পথে নেমেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন স্থানীয় স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, পরবর্তী আইনি লড়াইয়ের জন্য ইতিমধ্যেই তাঁরা সক্রিয় হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা ইতিমধ্যে জেনেছি। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ চলছে। গণেশ পুজো মিটলেই আমরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসব। নতুন করে আবেদন করার পথে এগোব।’’ কামদুনির নির্যাতিতার জন্য বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন টুম্পা কয়াল। তিনি বলেন, ‘‘এক দশকের বেশি সময় ধরে আমরা লড়াই করছি। এই লড়াই করতে গিয়ে আমাদের নানা কিছুর সম্মুখীন হতে হয়েছে। তা-ও আমরা লড়াই ছাড়িনি। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট যদি এমন নির্দেশ দেয়, তা অবশ্যই আমাদের কাছে আশার আলো। নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারি যে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।’’

এত দিন ট্রায়াল কোর্ট বা হাই কোর্টের রায়ে কোনও অভিযুক্ত ছাড়া পেলে রাজ্য এবং মামলাকারী আবার আপিল করতে পারতেন। ভুক্তভোগী বা নির্যাতিত যদি মামলাকারী না হন, তা হলে আবেদন করতে পারতেন না। সম্প্রতি বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বানাথন অভিযুক্তকে দোষী প্রমাণিত করার জন্য ভুক্তভোগী বা নির্যাতিতা কিংবা তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও আবার আবেদন করার অধিকার দিয়েছেন।

৫৮ পাতার রায় দিয়ে বিচারপতি নাগরত্ন জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর যেমন রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের অধিকার রয়েছে, তেমনই নির্যাতিতের অধিকারকে ওই একই জায়গায় রাখা উচিত। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘ফৌজদারি অপরাধ বিধির ৩৭২ ধারা অনুযায়ী আমরা দেখেছি, নির্যাতিতেরও আবেদন করার অধিকার রয়েছে। অভিযুক্তের সাজা লঘু হলে বা অভিযুক্ত নির্দোষ প্রমাণিত হলে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করার অধিকার রয়েছে নির্যাতিত বা ভুক্তভোগীর।’’ বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ, নির্যাতিতের মৃত্যু হলে তাঁর বৈধ উত্তরাধিকারীও এই আবেদন করতে পারেন। অপরাধের ধরন যা-ই হোক না কেন, ফৌজদারি অপরাধবিধি অনুসারে নির্যাতিত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করতে চেয়ে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবার আবেদন করতে পারেন। মামলাকারী বা রাজ্য চ্যালেঞ্জ না করলেও নির্যাতিতের সেই অধিকার রয়েছে।

২০১৩ সালের ৭ জুন কামদুনিতে এক ছাত্রীকে কলেজ থেকে ফেরার পথে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। ২০১৬ সালে কামদুনি ধর্ষণ মামলায় ব্যাঙ্কশাল কোর্ট তিন জনকে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল। তিন জনকে যাবজ্জীবন দিয়েছিল। যে তিন জনের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত, তাঁদের মধ্যে এক জনকে বেকসুর খালাস করে হাই কোর্ট। বাকি দু’জনের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি আরও তিন দোষী সাব্যস্তের সাজা মকুব করে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। কলকাতা হাই কোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই মামলা শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবারও শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবে।

আরজি কর কাণ্ডে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন দিয়েছে নিম্ন আদালত। তাঁর ফাঁসি চেয়ে সিবিআই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। সঞ্জয় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবার সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেনি। পরিবারের সদস্যেরা তদন্ত নিয়ে মামলা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ বার তাঁরাও সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।

Related to this topic:

Comments

Leave a Comment