F ভিডিয়ো গেমের আড়ালে শিশুদের দিয়ে সামরিক ড্রোন তৈরি করাচ্ছে রাশিয়া! শিউরে ওঠার মতো তথ্য উঠে এল তদন্তে
Newsletter image

Subscribe to the Newsletter

Join 10k+ people to get notified about new posts, news and tips.

Do not worry we don't spam!

ভিডিয়ো গেমের আড়ালে শিশুদের দিয়ে সামরিক ড্রোন তৈরি করাচ্ছে রাশিয়া! শিউরে ওঠার মতো তথ্য উঠে এল তদন্তে



ভিডিয়ো গেমের আড়ালে শিশুদের দিয়ে সামরিক ড্রোন তৈরি করাচ্ছে রাশিয়া! শিউরে ওঠার মতো তথ্য উঠে এল তদন্তে

নিষিদ্ধ রুশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইনসাইডার’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যুদ্ধাস্ত্র ও তার নকশা তৈরিতে কখনও সরাসরি, কখনও পরোক্ষ ভাবে দেশের শিশু-কিশোরদের জড়াচ্ছে রাশিয়া। এই ভয়ঙ্কর খেলা শুরু হয় আপাত দৃষ্টিতে ‘নিরীহ’ ভিডিয়ো গেম দিয়ে!

ভিডিয়ো গেম তৈরির দেশব্যাপী প্রতিযোগিতা আয়োজনের আড়ালে আদতে শিশু-কিশোরদের দিয়ে ইউক্রেন-যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ড্রোন তৈরি করাচ্ছে রাশিয়া! সম্প্রতি তদন্তমূলক সাংবাদিকতায় উঠে এসেছে এমনই নানা ভয় ধরানো তথ্য। কখনও ভিডিয়ো গেমের নকশাকে কাজে লাগানো হচ্ছে সামরিক প্রযুক্তিতে, কখনও প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ধাপ থেকে বাছাই করে দেশের প্রতিভাবান সদ্যতরুণদের নিয়োগ করা হচ্ছে বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থায়, কখনও আবার অস্ত্রকারখানায় সরাসরি কাজ করানো হচ্ছে শিশুদের।

নিষিদ্ধ রুশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইনসাইডার’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যুদ্ধাস্ত্র ও তার নকশা তৈরিতে কখনও সরাসরি, কখনও পরোক্ষ ভাবে দেশের শিশু-কিশোরদের জড়াচ্ছে রাশিয়া। এই ভয়ঙ্কর খেলা শুরু হয় আপাত দৃষ্টিতে ‘নিরীহ’ ভিডিয়ো গেম দিয়ে! গেমের বিভিন্ন ধাপে বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে নানা প্রতিকূলতা পেরোতে পারলে তবেই চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছোনো যায়। তার পর সবচেয়ে প্রতিভাবান কিশোরদের বেছে নেয় প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি। এমনই এক কিশোররে কথায়, ‘‘বাচ্চারা বিভিন্ন সামরিক ড্রোনের নকশা তৈরিতে সক্রিয় ভাবে জড়িত। আমি নিজেই এমন বেশ কয়েক জনকে চিনি, যারা বিভিন্ন বড় বড় সামরিক উদ্যোগের জন্য ইউএভি (মানবহীন আকাশযান)-এর নকশা তৈরির কাজ করেছে।’’

‘দ্য ইনসাইডার’-এর মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে দেশে ড্রোন এবং যুদ্ধাস্ত্রের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু, ব্যাপারটা শুনতে সহজ মনে হলেও আদতে তা নয়। প্রতি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে দুই দেশের যুদ্ধপরিস্থিতি। কারণ, কোনও দেশই থেমে নেই। রোজ অনবরত নিত্যনতুন প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়ে চলেছে। ফলে পাল্লা দিয়ে উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে সামরিক অস্ত্রশস্ত্রও। উভয় পক্ষই নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে, যাতে ড্রোনগুলি আরও দীর্ঘ সময় ধরে উড়তে পারে এবং বৈদ্যুতিন জ্যামিং সিস্টেম এড়াতে পারে। ফলে এই কাজ খানিকটা সহজ করার জন্যই এই কৌশল নিয়েছে রাশিয়া। দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে থেকে সবচেয়ে বুদ্ধিমান কয়েকজনকে বেছে নিতে চাইছে রুশ প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি।

গল্পের শুরু ২০২২ সালে চালু হওয়া ‘বেরলোগা’ নামে একটি ভিডিয়ো গেম দিয়ে, যেখানে একঝাঁক মৌমাছির থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হত ‘বুদ্ধিমান ভালুক’দের। কখনও কখনও মৌমাছিদের তাড়াতে ড্রোনও ব্যবহার করতে হত। লক্ষ লক্ষ রুশ শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করত এই খেলায়। এই গেমটিতে সফল হতে পারলে স্কুলের গণ্ডি পেরনোর পরীক্ষায় অতিরিক্ত নম্বরও জু়টত। গেম শেষে সব থেকে সফল খেলোয়াড়েরা অংশগ্রহণ করতে পারত আরও উন্নত এক প্রতিযোগিতায়— যার নাম ‘বিগ চ্যালেঞ্জেস’। মূলত ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা এই প্রতিযোগিতায় রুশ সংস্থাগুলি প্রতিভাবান স্কুলপড়ুয়াদের মধ্য থেকে বাছাই করে নিত সেরাদের।

প্রতিযোগিতার তিন কিশোর ফাইনালিস্টের সঙ্গে কথা বলেছে ‘দ্য ইনসাইডার’। তাদের কথায়, ‘‘আমরা জানতাম যে এই প্রজেক্টের প্রয়োগ সরাসরি সামরিক ক্ষেত্রে করা হয়। কিন্তু আমাদের এটা কাউকে বলতে নিষেধ করা হয়েছিল। শিশু-কিশোরদের কথা মাথায় রেখেই গোটা বিষয়টা এ ভাবে সাজানো হয়েছে। মাথায় রাখতে হবে, এখানে যে কোনও প্রজেক্টের দ্বৈত উদ্দেশ্য রয়েছে, বিশেষত আমরা যেহেতু স্কুলপড়ুয়া! আমরা দেখেছি, প্রতিটি প্রতিযোগিতাতেই যেন অলিখিত ভাবে এই গোপনীয়তার নিয়ম ছিল।’’

শুধু ড্রোনের নকশা তৈরিই নয়, সরাসরি ড্রোন তৈরিতে শিশুরা জড়িত। রুশ সেনাবাহিনীর টেলিভিশন স্টেশন দ্বারা সম্প্রচারিত একটি তথ্যচিত্রে সম্প্রতি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্ট্রাইক ড্রোন প্রস্তুতকারক এক কারখানায় কিশোর-কিশোরীদের কামিকাজ়ে ড্রোন তৈরিতে সহায়তা করতে দেখা গিয়েছে। যুদ্ধকালীন সময়ে অন্যতম লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠতে পারে এমন সামরিক স্থাপনায় শিশুদের নিয়োগ করা বেআইনি, এবং বহু আন্তর্জাতিক নিয়মেরও পরিপন্থী। ফলে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই সাড়া পড়ে গিয়েছে বিশ্বে। যদিও রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম জ্‌ভেজদা জানিয়েছে, আলাবুগায় অবস্থিত ওই কারখানাটিতে ১৪ এবং ১৫ বছর বয়সি পড়ুয়াদের ড্রোন তৈরির বিষয়ে হাতেকলমে পড়াশোনা করার জন্য কারখানায় আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।

Related to this topic:

Comments

Leave a Comment