F রংবেরঙের পোশাকে অগণিত মানুষ, একাধিক জায়ান্ট স্ক্রিন, তারকাদের মেলা
Newsletter image

Subscribe to the Newsletter

Join 10k+ people to get notified about new posts, news and tips.

Do not worry we don't spam!

রংবেরঙের পোশাকে অগণিত মানুষ, একাধিক জায়ান্ট স্ক্রিন, তারকাদের মেলা



রংবেরঙের পোশাকে অগণিত মানুষ, একাধিক জায়ান্ট স্ক্রিন, তারকাদের মেলা

 

প্রতি বারের মতো এ বারও ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বাঁধা হয়েছে মঞ্চ। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে ধর্মতলায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হতে শুরু করেছিলেন সোমবার সকাল থেকেই। খোলা মঞ্চেই হচ্ছে সমাবেশ। মঞ্চ ঘেরা হয়েছে দলীয় পতাকার তিনটি রঙে।

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের শেষ বড় সমাবেশ। ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহিদ দিবস। বিগত দু’দশক ধরে ২১ জুলাই তারিখটি তৃণমূলের কাছে অঘোষিত বার্ষিক রাজনৈতিক সমাবেশ। ৩৪ বছরের বাম শাসনের পালাবদল ঘটিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। বাংলার কুর্সি দখল করার পর তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা আলাদা করে ‘বিজয় উৎসব’ পালন করবেন না। জয়ের উদ্‌যাপন হবে ২১ জুলাই ‘শহিদ তর্পণের’ দিন।

প্রতি বারের মতো এ বারও ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বাঁধা হয়েছে মঞ্চ। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে ধর্মতলায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হতে শুরু করেছিলেন সোমবার সকাল থেকেই। মূল সমাবেশ মঞ্চ হিসাবে তৈরি করা হয়েছে তিনটি মঞ্চ।

সমাবেশ মঞ্চে প্রধান আকর্ষণ দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি বারের মতো এ বারও সেজে উঠছে ত্রিস্তরীয় মঞ্চ। তিনটি মঞ্চের একটিতে রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের প্রথম সারির নেতৃত্ব। দ্বিতীয় মঞ্চটি ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যদের জন্য নির্দিষ্ট। তৃতীয় মঞ্চে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।

দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সভায় পা রাখেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পহেলগাঁওয়ে নিহত বাঙালিদের পরিজনদের নিয়ে ধর্মতলার মঞ্চে এলেন মমতা। মূল মঞ্চে তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিষেক, পুরমন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম, শতাব্দী রায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, শশী পাঁজা।

খোলা মঞ্চেই হচ্ছে সমাবেশ। মঞ্চ ঘেরা হয়েছে দলীয় পতাকার তিনটি রঙে। সমাবেশ থেকে দলনেত্রীর বার্তা যাতে মঞ্চ থেকে দূরে থাকা কর্মীদের কাছে পৌঁছে যায় তার জন্য এসপ্ল্যানেড ও পার্ক স্ট্রিট এলাকায় বসানো হয়েছে একাধিক জায়ান্ট স্ক্রিন। শহরের বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা থাকছে।

সমাবেশ ঘিরে মাঠে নেমেছেন হাজারখানেক স্বেচ্ছাসেবক। তৃণমূলের ফ্লেক্স, পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে রাস্তাঘাট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় কাট-আউট বসানো হয়েছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়।

সকাল থেকেই শহরে সাজ-সাজ রব। মঞ্চের সামনে থেকে নেত্রীর বক্তব্য শুনতে অনেকে চলে এসেছেন রবিবারই। এমনকি, রাত ১২টা-১টা থেকে অনেকে ধর্মতলার মঞ্চের কাছে বসেছিলেন। ধর্মতলার পাশাপাশি গোটা শহরের নিরাপত্তার দেখাশোনায় ছিলেন অতিরিক্ত ৫০০০ পুলিশকর্মী। রাস্তায় নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয় কয়েক হাজার ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে।

২১ জুলাইয়ের সমাবেশ শুরুর আগে যান নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। পুলিশ সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করেছিল। সকালের দিকে রাস্তাঘাটে যানজট না থাকলেও বেলা বাড়তেই বিভিন্ন জেলা থেকে ধর্মতলায় কর্মী সমর্থকেরা জমায়েত হতে শুরু করেন। গণপরিবহণ কম থাকায় প্রচুর নিত্যযাত্রীকে সমস্যায় পড়তে হয়। যাঁরা শিয়ালদহের দিক থেকে আসছিলেন তাঁদের মৌলালি হয়ে হেঁটে ধর্মতলার দিকে যেতে হয়।

ত্রিস্তরীয় মঞ্চটি ঘেরা রয়েছে তৃণমূলের পতাকায়। রয়েছে তিনটি ‘শহিদ’ বেদিও। সাদা কালো সেই বেদিতে তাতে লেখা রয়েছে ১৩ জন ‘শহিদে’র নাম। সাদা ফুল দিয়ে সাজিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করা হয়েছে ‘শহিদ’ বেদিতে।

ত্রিস্তরীয় মঞ্চটি ঘেরা রয়েছে তৃণমূলের পতাকায়। রয়েছে তিনটি ‘শহিদ’ বেদিও। সাদা কালো সেই বেদিতে তাতে লেখা রয়েছে ১৩ জন ‘শহিদে’র নাম। সাদা ফুল দিয়ে সাজিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করা হয়েছে ‘শহিদ’ বেদিতে।

ওই অভিযান রুখতে তৎপর হয় কলকাতা পুলিশ। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ব্যারিকেড তৈরি হয়। ক্রমশ উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। চলে গুলি। নিহত হন ১৩ জন যুব কংগ্রেসের নেতা-কর্মী। এর প্রেক্ষিতে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। ওই সময় রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পরবর্তী কালে এই মামলায় বুদ্ধদেবকে ক্নিনচিট দেয় সিবিআই।

১৯৯৩ সালের ওই ঘটনাকে স্মরণ করে প্রতি বছর ২১ জুলাই ধর্মতলায় সভা করে আসছে তৃণমূল। এ বছরের সেই সভার ডান দিকে রাখা হয়েছে ভাষণ দেওয়ার জন্য বিশেষ পোডিয়াম। ১৩ ফুট উঁচু ও ৪২ ফুট চওড়া মঞ্চে দলের সাংসদ, বিধায়ক, অতিথিরা ছাড়াও প্রত্যেক বছরের মতো ‘শহিদ’ পরিবারের লোকেদের জন্য আলাদা ভাবে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ধর্মতলায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে রবিবার হাজির হন খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমেরা। উপস্থিত ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা।

সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সভা শুরুর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। একে একে ধর্মতলার মঞ্চে উপস্থিত হতে শুরু করেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী এবং বিধায়কেরা। ভিড় জমাতে শুরু করেন কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই ভিড় আরও বাড়ে।

মঞ্চের সামনে ব্যারিকেডের সামনে থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত যে দিকে তাকানো যায় সেদিকে শুধু অগনিত মাথা। হাতে দলীয় পতাকা, প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় বসে বহু মানুষ। তৃণমূলের দলীয় প্রতীক ঘাসফুলের অনুকরণে নিজেকে সাজিয়ে ২১ জুলাইয়ের সভাস্থলে নজর কাড়লেন এক তৃণমূল সমর্থক।

ধর্মতলার মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন মন্ত্রী ও গায়ক ইন্দ্রনীল সেন, কবি সুবোধ সরকার, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কার্যকরী সমিতির সদস্য শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, প্রাক্তন ফুটবলার শ্যাম থাপা, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপেন্দু বিশ্বাস, রহিম নবি প্রমুখ। মঞ্চে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।

ধর্মতলার মঞ্চে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক মুখের ভিড়। সভা শুরুর আগে ধর্মতলার মঞ্চে উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের উজ্জীবিত করতে সঙ্গীত পরিবেশন করলেন সৌমিত্র রায় এবং সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়। রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও। তিনি মঞ্চে বসেছেন সংস্কৃতি জগতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। দ্বিতীয় সারিতে বসতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

মমতা সভাস্থলে আসার আগে সমাবেশে হাজির হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে এসে উপস্থিত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে হাত নাড়ান তিনি। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন টলিউড ও টেলি পাড়ার অভিনেতা-অভিনত্রীরা।

প্রতি বারের মতো এ বারও ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে উপস্থিত বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীরা। সাংসদ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রিমঝিম মিত্র, রূপাঞ্জনা মিত্র, সৌমিতৃষা কুণ্ডু, সোমা চক্রবর্তী, সুভদ্রা মুখোপাধ্যায়-সহ ছোট এবং বড় পর্দার অভিনেত্রীরা। ছিলেন ভারত কল, দিগন্ত বাগচী, পরিচালক অরিন্দম শীল।

ধর্মতলার মঞ্চে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক মুখের ভিড়। সভা শুরুর আগে ধর্মতলার মঞ্চে উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করতে সঙ্গীত পরিবেশন করলেন সৌমিত্র রায় এবং সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়। রোদ থেকে বাঁচতে টুপি, ছাতা মাথায় দিয়ে সভাস্থলে অপেক্ষা করছেন দলীয় নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে তৃণমূল কর্মী, সমর্থক ও অনুগামীরা।

ক্রমশ ভিড় বাড়ছে ধর্মতলা চত্বরে। সকলের পা শহিদ স্মরণে সভার দিকে। সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সভার মঞ্চে একে একে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। ধর্মতলার মঞ্চে গান গাইলেন সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী।

Related to this topic:

Comments

Leave a Comment